নিজেস্ব প্রতিনিধি, উলুবেড়িয়া: আগামী বছরেই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর তার আগে আমরা ঘুরে দেখবো রাজ্যের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। তুলে ধরবো সেখানকার উন্নয়ন থেকে শুরু করে ওই এলাকার অনউন্নয়নের ছবিও। কথা বলবো সেখানকার সাধারণ মানুষ থেকে পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে। তুলে ধরবো সেই এলাকার সমস্ত খাবর।
আর সেই খবরের সন্ধানে বৃহস্পতিবার আমরা আমরা গিয়েছিলাম উলুবেড়িয়া-২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত জোয়ারগরী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। কথা বলেছিলাম পঞ্চায়েত প্রধান মানিক চন্দ্র মাখালের সঙ্গে। মূলত ১৬ আসন বিশিষ্ট এই গ্রাম পঞ্চায়েত ২০১৮ সালে দখলে যায় বিজেপির। পরে বিজেপির এক সদস্যের মৃত্যুতে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল যায় শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে। বর্তমানে মানিক চন্দ্র মাখাল এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। উপ প্রধান হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মিঠু পন্ডিত পাঁজা ও বিরোধী দল নেতা হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বাদল পোল্যে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে ২০১১ সালের জন সংখ্যার নিরিখে এই গ্রাম পঞ্চায়েতে জন সংখ্যা ছিল ২৩১৪৩ জন। পাশাপাশি এই গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০২১ সালের নিরিখে ভোটার সংখ্যা আনুমানিক ১৫৩৫৭ জন বলে জানা গেছে।
আর এই বিষয়েই এদিন আমরা জোয়ারগরী গ্রাম পঞ্চায়েতের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলি পঞ্চায়েতের প্রধান মানিক চন্দ্র মাখালের সঙ্গে। পঞ্চায়েত এলাকার উন্নয়নের প্রসঙ্গে এদিন তিনি বলেন, পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৯০ শতাংশ কাজই রূপায়ণ করা হয়েছে। বাকি রয়েছে এলাকার বেশকিছু রাস্তাঘাট ও রাস্তার আলো তা চেষ্টা করা হচ্ছে এই কাজ গুলিও যাতে দ্রুত সম্পন্ন করা যায়। পাশাপাশি তিনি বলেন, তার এলাকার বেশিরভাগ রাস্তাই পিচ ও কংক্রিটের তৈরি। বর্তমানে এই পঞ্চায়েত এলাকায় গৃহ প্রকল্পের আওতায় ঘর পেয়েছে আনুমানিক প্রায় ১ হাজার জন মানুষ বলেও এদিন জানান তিনি। বর্তমানে ওই এলাকায় প্রায় ৫ হাজার জন মহিলা লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি প্রায় আনুমানিক ৪৫০০ মানুষের হাতে তারা তুলে দিতে পেরেছে স্বাস্থ্য সাথী ও এলাকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত আছে। তবে তার পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে থাকা শিল্প তালুক গুলিতে আরও একটু বেশি করে নিরাপত্তার স্বার্থে নজর দেওয়ার কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও দুর্নীতির প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, স্বচ্ছতার দিকে থেকে জোয়ারগরী গ্রাম পঞ্চায়েত ১০০/১০০ শতাংশ স্বচ্ছ। শুধু তাই নয় এদিন তিনি আরো বলেন, পঞ্চায়েত এলাকার যেকোনো ধরণের উন্নয়নের বিষয় ও কাজের ক্ষেত্রে বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিরোধীদের সমান প্রাধান্য দেওয়া হয়। অন্যদিকে তিনি বলেন, পঞ্চায়েত এলাকার উন্নয়নের নিরিখে ভোট হলে তারা ১৬/১৬ টি আসন পাবে বলেও জানান তিনি।
পাশাপাশি তিনি বলেন পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পরিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দিতে এখনো কিছুটা সমস্যা আছে। তবে এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে পানীয় জলের টিউবওয়েল। অন্যদিকে এলাকায় নিকাশির বেশকিছুটা সমস্যা রয়েছে তবে তা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও জানান মানিক বাবু। অন্যদিকে তিনি বলেন, বর্তমানে গোটা পঞ্চায়েত এলাকা থেকে প্রায় ৯০০ জন বিধবা মহিলা পাচ্ছেন বিধবা ভাতা ও ৩৫০০ জন বয়স্ক মানুষ বয়স্ক ভাতার মাধ্যমে মাসিক সুবিধা ভোগ করছেন বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে পঞ্চায়েত এলাকায় আনুমানিক প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে সংস্কার করা হয়েছে চারটি শ্মশানকে। পাশাপাশি এলাকার কবরস্থান উন্নয়নেও হাত দেওয়া হয়েছে বলে জানান জোয়ারগরী গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত প্রধান মানিক চন্দ্র মাখাল।
অন্য দিকে পঞ্চায়েতে এলাকার উন্নয়ন প্রসঙ্গে ওই এলাকার বেশকিছু মানুষকে প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, পঞ্চায়েত এলাকায় পর্যাপ্ত নতুন রাস্তাঘাট হয়েছে। তবে বেশকিছু রাস্তাঘাট এখনো বাকি রয়ে গেছে। নতুন করে বেশকিছু রাস্তা খারাপ হয়েছে, সেই রাস্তা গুলি সংস্কারের দাবি জানান স্থানীয়রা। অন্যদিকে জোয়ারগরী গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশকিছু অন্ধকার যুক্ত রাস্তায় আলো লাগানোর জন্য পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।