BREAKING

Monday, 29 November 2021

শীতে বেরিয়ে আসতে পারেন বর্ধমানের অম্বিকা কালনায়

সবে মাত্র শীত পড়তে শুরু করেছে। আর এই শীতে এক বা দু দিনের ট্রিপে বেরিয়ে আসতেই পারেন, রাজ্যের মধ্যেই অবস্থিত মন্দির নগরী কালনায় বা অম্বিকা কালনায়। ভাগীরথী নদীর পশ্চিম পাড়ে ঐতিহাসিক শহর এই কালনা। বর্তমানে পূর্ব বর্ধমান জেলার মধ্যে অবশিষ্ট এই কালনা শহর। অনেকে এই শহরকে আবার ‘অম্বিকা কালনা’ নামেও ডেকে থাকে। জানা যায় দেবী কালীর আরেক অন্য রূপ অম্বিকা। সেই দেবীর নাম অনুসারেই এই শহরের নাম হয়েছে অম্বিকা কালনা। বর্তমানে টেরাকোটার মন্দির স্থাপত্যের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে এই শহর। এই শহরের মধ্যে রয়েছে একাধিক মন্দির। তাই এই শহরকে ‘মন্দিরের শহর’ বলেও অনেকে ডেকে থাকে।
                    ১০৮টি শিবমন্দির
এবারে আসা যাক কিভাবে যাবেন এই শহরে:-হাওড়া বা শিয়ালদা থেকে আপনাকে ট্রেনে করে চলে যেতে হবে অম্বিকা কালনা স্টেশনে। হাওড়া-কাটোয়া বা শিয়ালদা থেকে শিয়ালদা-কাটোয়া লোকাল ধরে নিতে পারেন। অম্বিকা স্টেশনে নামার পর পেয়ে যাবেন টোটো। একটি টোটো নিয়ে চলে যান রাজবাড়ীর উদ্যেশে। ভাড়া পড়বে জন প্রতি ১০ টাকা। চাইলে আপনি সড়ক পথেও যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে কলকাতা থেকে দিল্লি রোড ধরে যেতে হবে কালনায়। অথবা ব্যান্ডেল, চন্দননগর হয়েও আপনি যেতে পারেন কালনায়।

কোথায় থাকবেন:-আপনি চাইলে এক দিনেও গিয়ে ঘুরে চলে আসতে । আবার চাইলে একদিন থাকতেও পারেন কালনায়। সেক্ষেত্রে ছোট বড় বেশকিছু হোটেল পেয়ে যাবেন।
                  প্রতাপেস্বর শিব মন্দির
কালনায় দর্শনীয় স্থান বা কালনায় কি কি দেখবেন:- কালনায় ঘুরে দেখার মতো প্রচুর স্থান রয়েছে। আঙি সেখানে ঘুরে দেখতে পারেন ১০৮টি শিবমন্দির, যা এলাকায় নবকৈলাশ নামে পরিচিত। বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায় ১৮০৯ সালে বর্ধমানের রাজা তেজচন্দ্র বাহাদুর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই মন্দির গুলির। আর এই মন্দির সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে একটি জলাধার।
                            রাস মঞ্চ
আর এই ১০৮ শিব মন্দিরের ঠিক উল্টোদিকেই রয়েছে রাজবাড়ি। আর সেই রাজবাড়ীর ভিতরে রয়েছে বেশ কিছু টেরাকোটা মন্দির। মন্দিরের প্রবেশ দ্বারেই রয়েছে একটি পুরোনো কামান। পাশাপাশি রাজবাড়ির ভিতরে রয়েছে প্রতাপেশ্বর শিবমন্দির। বর্ধমানের জমিদারপুত্র প্রতাপচাঁদের স্মৃতিতে এই শিব মন্দিরটি নির্মাণ হয়েছিল বলে জানা যায়। আর মন্দিরটি ‘দেউলের’ আক্বসুন্দর নিদর্শন বহন করে চলেছে।

আর এই শিব মন্দিরের পাশেই ছাদ ভাঙা অবস্থায় রয়েছে রাস মঞ্চ। আর একটু ভিতরে গেলেই রয়েছে লালজি মন্দির। ১৭৩৯ সালে বর্ধমানের মহারানি ব্রজকিশোরী দেবী এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন বলে জানা যায়। আর এর পাশেই পঁচিশরত্ন মন্দিরে রয়েছে রাধাকৃষ্ণ। বাঁদিকে রয়েছে  গিরিগোবর্ধন মন্দির।

এছাড়াও রাজবাড়ি থেকে বেরিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন ভাগীরথীর গোপালবাড়ি মন্দির, অনন্ত বাসুদেব মন্দির, ঝলক গৌড়ঙ্গের মন্দির। তবে মনে রাখবেন এই ঝলক গৌড়ঙ্গের মন্দিরে কিন্তু ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অন্যদিকে ঘুরে দেখতে পারেন পাতাল গঙ্গা, গৌড়ঙ্গের বিবাহ স্থলও। এর কিছুটা দূরেই রয়েছে গৌড়ঙ্গের পায়ের চিহ্ন বিজড়িত এক মন্দির, রয়েছে সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির। যা অম্বিকা কালি মন্দির নামে খেত। কথিত আছে এই দেবেরী নাম অনুসারেই প্রাচীন এই শহরের নাম কারণ হয়েছে অম্বিকা কালনা।
                           গোপাল বাড়ি