BREAKING

Saturday, 5 November 2022

প্রায় তিন দশক পর শ্যামপুরের দিহি মন্ডল ঘাটে তৈরি হয়েছে হারিয়ে যাওয়া "ছোট নৌকা"

ডেস্ক রিপোর্ট, অজানা বাংলা: এক সময় যে নৌকা রুপনারায়ণ দাপিয়ে পৌঁছে যেত সমুদ্রে জেলেদের সঙ্গে মাছ ধরতে। তা একসময় মাছ ধরার পক্ষে দারুন উপযোগী ছিল জেলেদের কাছে। নাম তার ছিলো' ছোট' নৌকা। মাছ ধরার পক্ষে সেই নৌকায় সুবিধা থাকলেও বর্তমানে নদীর গভীরতা ক্রমশ কমার ফলে, ক্রমশ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ছোট নৌকার ব্যাবহার। ঠিক তেমনি হাওড়া জেলার শ্যামপুরের জেলেরাও বন্ধ করে দেয় ছোট নৌকার ব্যাবহার। প্রায় ৩০ বছর আগে শেষবারের মতো ছোট নৌকো তৈরি হয়েছিল শ্যামপুরের স্থানীয় দক্ষ নৌকা কারিগর পঞ্চানন মন্ডলের হাতে। ভারত ও বিট্রেনের যৌথ ভাবে, ব্রিটিশ সংস্থা এনডেঞ্জার্ড নলেজ পোগ্রম অর্থনৈতিক সহযোগিতায় তৈরি হচ্ছে সেই ছোট নৌকা, যা ভারতের বুকে এই প্রথম বার।

জানা গেছে প্রায় ৩.৫ লক্ষ টাকা ব্যয় ও ৪০ দিনের এই প্রজেক্ট, শ্যামপুর ডিহি মন্ডল ঘাটের মিস্ত্রিপাড়ার একটি পরিবার তৈরি করছে ওই নৌকাটি। পঞ্চানন মন্ডল দক্ষ ছোট নৌকা তৈরির কারিগর, তিনি ও তার ৪ ছেলে মিলে তৈরি করছে এই ছোট নৌকা। নৌকা তৈরীর শুরু থেকে ক্যামেরাবন্দি করা হচ্ছে এই ক্যামেরাবন্দী বা রেকর্ডিং ইংল্যান্ডের একটি মিউজিয়ামে সংরক্ষিত থাকবে বলেও জানা গেছে। হারিয়ে যাওয়া সেই ছোট নৌকা তৈরি পদ্ধতি কেও চাইলে তা ভিডিও আকারে দেখতে পাওয়া যাবে ভবিষ্যতে।

এক সময়ে দারুণভাবে এই নৌকা হাওড়া জেলার জেলেদের মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত হলেও এখন তা আর ব্যবহার হয় না। কারণ নদীর গভীরতা, জলের চরিত্র এবং স্রোত অনুযায়ী নৌকার গঠন হয়, হাওড়া শ্যামপুর ডিহি মন্ডল ঘাটের জেলেরা এই ছোট নৌকা ব্যবহার করত কয়েক দশক আগে, যখন রূপনারায়ণ নদের গভীরতা ছিল অনেক। নদীর চরিত্র যতই পরিবর্তন হতে থাকে। নদীতে চড়া পড়ার ফলে এই নৌকায় করে মাছ ধরে নিয়ে আসার সময় চড়ায় আটকে নৌকা কাত হয়ে যায়, ফলে জেলেদের ক্ষতি হতে শুরু করে। আর তারপর থেকেই ধীরে ধীরে এই ছোট নৌকা ব্যবহার ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় জেলা থেকে।

সে সময়ের দক্ষ ছোট নৌকা কারিগর পঞ্চানন মন্ডল নিজের হাতে বহু ছট নৌকা তৈরি করেছেন, তবে তার চার ছেলে এখন নৌকা তৈরীর কাজে যুক্ত থাকলেও তার তার বড় ছেলে কিছুটা কাজ জানেন, বাকি তিন ছেলে জানেন না ছোট নৌকা তৈরি। 

প্রায় তিন দশক পরে পঞ্চানন বাবুর হাতে এমন সুযোগ, সেই সঙ্গে তার ছেলেদের কাছে ছোট তৈরির সুযোগ আসে কলকাতার নৃতত্ববিদ স্বরূপ ভট্টাচার্যের হাত ধরে। পঞ্চানন বাবু তিনি কাজ করেননি তার চার ছেলেকে তিনি দাঁড়িয়ে থেকে ছট নৌকো কিভাবে তৈরি করতে হয় সমস্ত কিছু বলে দিচ্ছেন। সেই মতো কাজ করছেন ছেলেরা।

আর শুরু থেকে সমস্ত কিছু ক্যামেরাবন্দি, এমন কাজ আগে করেনি পঞ্চানন বাবু আর তার ছেলেরা এই কাজ হাতে পেয়ে দারুণভাবে খুশি। তিনি বলেন দীর্ঘদিন এই কাজের সঙ্গে যুক্ত এটাই সবথেকে সেরা তার কর্ম জীবনে। ব্রিটেন ও ভারতীয় যৌথ উদ্যোগ, ব্রিটেনের এক্সটার বিশ্ববিদ্যালয়ের  অধ্যাপক জন কি কুপার, হরিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বসন্ত সিন্ধে এবং কলকাতার নিতত্ত্ববিদ স্বরূপ ভট্টাচার্য গোটা প্রকল্পের দেখভাল করছেন।